কোরআন কেন্দ্রিক জীবন। পর্ব : ০৫।
কতদিনে কুরআন খতম করা উচিত। এ বিষয়টি আমাদের অনেকেরই জানা নেই। আসলে আমরা কুরআন নিয়ে খুব বেশি একটা ভাবি না। আমাদের অন্যান্য ভাবনার কোন অন্ত নেই। এবং সময়েরও কোন অভাব হয় না। আমাদের সময়ের স্বল্পতা কেবল কুরআন নিয়ে। আল্লাহ আমাদের কুরআন নিয়ে ভাবার তাওফীক দান করুন।
কুরআন মূলত কতদিনে খতম করা উচিত এটা তেমন কোন উল্লেখযোগ্য প্রশ্ন না। যতবেশি সম্ভব কুরআন খতম করা উচিত। তবে সাহাবায়ে কেরাম রাযিআল্লাহু আনহুম ও তাবিয়ীগণের সাধারণ নিয়ম ছিলো, প্রতি সপ্তাহে একবার পবিত্র কোরআন খতম করা। তাই তাঁরা দৈন্দিন তেলাওয়াতের জন্য, পবিত্র কোরআনের একটি নির্দিষ্ট অংশ ঠিক করে নিয়েছিলেন। ঐ দৈন্দিন তেলাওয়াতর ঐ নির্দিষ্ট অংশকেই ‘হিজব’ বা ‘মানজিল’ বলে। এভাবে পবিত্র কোরআনুল কারীমকে পূর্ণ সাত মানজিলে ভাগ করা হয়েছে।
সাত মানজিল হল-
১ম মানজিল: সূরা আল-ফাতিহা (প্রথম সূরা) থেকে সূরা আন-নিসা (চতুর্থ সূরা) পর্যন্ত, এতে ৪টি সূরা রয়েছে।
২য় মানজিল: সূরা আল-মায়িদাহ (পঞ্চম সূরা) থেকে সূরা আত-তাওবাহ্ (নবম সূরা) পর্যন্ত, এতে ৫টি সূরা রয়েছে।
৩য় মানজিল: সূরা ইউনুস (দশম সূরা) থেকে সূরা আন-নাহল (ষষ্ঠদশতম সূরা) পর্যন্ত, এতে ৭টি সূরা রয়েছে।
৪র্থ মানজিল: সূরা আল-ইসরা’ (সপ্তদশতম সূরা) থেকে সূরা আল-ফুরকান (পঞ্চবিশতম সূরা) পর্যন্ত, এতে ৯টি সূরা রয়েছে।
৫ম মানজিল: সূরা আশ্-শূরা’ (ষষ্ঠবিংশতম সূরা) থেকে সূরা ইয়াসীন (ছত্রিশতম সূরা) এতে ১১টি সূরা রয়েছে।.
৬ষ্ঠ মানজিল: সূরা আস-সাফফাত (সাঁইত্রিশতম সূরা) থেকে সূরা আল-হুজুরাত (উনপঞ্চাশতম সূরা) এতে ১৩টি সূরা রয়েছে।
৭ম মানজিল: সূরা ক্বাফ (পঞ্চাশতম সূরা) থেকে সূরা নাস (একশত চৌদ্দতম সূরা) এতে ৬৫টি সূরা রয়েছে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনদিনে খতম করতে নিষেধ করেছেন।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، أَنَّهُ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فِي كَمْ أَقْرَأُ الْقُرْآنَ قَالَ ” فِي شَهْرٍ ” . قَالَ إِنِّي أَقْوَى مِنْ ذَلِكَ – يُرَدِّدُ الْكَلاَمَ أَبُو مُوسَى – وَتَنَاقَصَهُ حَتَّى قَالَ ” اقْرَأْهُ فِي سَبْعٍ ” . قَالَ إِنِّي أَقْوَى مِنْ ذَلِكَ . قَالَ ” لاَ يَفْقَهُ مَنْ قَرَأَهُ فِي أَقَلَّ مِنْ ثَلاَثٍ ” .
আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি কয়দিনে কুরআন খতম করবো? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এক মাসে। তিনি বললেন, আমি এর চেয়ে অধিক শক্তি রাখি। আবু মূসার বর্ণনায় রয়েছে অতঃপর আলোচনার মাধ্যমে সময়ের ব্যবধান কমিয়ে অবশেষে বললেন, সাত দিনে খতম করবে। তিনি বললেন, আমি এর চেয়েও বেশি শক্তি রাখি। তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি তিন দিনের কমে কুরআন খতম করে, সে কুরআনকে হৃদয়ঙ্গম করতে পারেনি। (সুনানে আবু দাউদ- ১৩৯০)
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে সপ্তাহে এক খতম কুরআন পড়ার তাওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমীন।